আজ ৩১শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৬ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

যৌবনের লিপ্সা, বার্ধক্যের অনুতাপ

Spread the love

জান্নাতুল আদন: নারী লিপ্সা যেসব পুরুষের আছে, দয়া করে বার্ধক্যকে ভয় করুন যখন আপনার শক্তপোক্ত এই যৌবনের কিছুই থাকবে না। ওয়ার্ডের এক কোণে দেখেছি এক পঞ্চাশ বছর বয়সী রোগীকে।অল্প হাঁটার রাস্তায় প্রস্রাব করে ফেলেছেন তিনি, আর সেই প্রস্রাব নিচু হয়ে পরিষ্কার করছেন তার স্ত্রী দ্রুত অস্বস্তি নিয়ে, কারণ সেটিই হাঁটার একমাত্র পথ।

এরকম দৃশ্য সরকারি হাসপাতালে একদম নরমাল, কিন্তু গভীরভাবে কাঁপিয়ে দেয় মনকে, মানুষ জীবন নিয়ে কত অহংকার করে, অন্যকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে অথচ এই জীবন কোথাও না কোথাও এতো ছোট, এতো সংকীর্ণ আর পরকালে তো বলার অপেক্ষায় রাখে না, সেদিন মানুষ বলবে হায় আমি যদি মাটি হতাম। আমরা প্রায়ই শুনি কিডনির সমস্যা হলে ডায়ালাইসিস দিতে হয়।কিন্তু কখনো কি ভেবেছেন, ডায়ালাইসিস আসলে কী?

এটি এমন এক যন্ত্র যার মাধ্যমে শরীরের রক্ত বাইরে এনে পরিষ্কার করা হয়।আমাদের কিডনি যে কাজটি করে রক্তের বিষাক্ত পদার্থ, অতিরিক্ত লবণ ও পানি অপসারণ কিডনি অকেজো হয়ে গেলে সেই কাজ বাহির থেকে করে দেয় এই যন্ত্র।নিচের ছবিটি একজন রোগীর ডায়ালাইসিস চলাকালীন সময়ের। একজন কিডনি রোগীর জীবনের কষ্ট কল্পনাতীত।তাদের পানি পর্যন্ত মেপে মেপে খেতে হয়।প্রতিদিনের এই স্থায়ী যন্ত্রণা শুধু রোগীর নয়, তার পরিবারেরও এক অন্তহীন ক্লান্তি।রোগী আর তার সঙ্গীর এই জীবনযুদ্ধের ভার আমরা কেবল দূর থেকে অনুভব করতে পারি কিন্তু ভেতরটা আসলে কতটা ক্লান্তির, বিরক্তির, অভিশাপের তারাই জানে।

আমাদের সমাজে অধিকাংশ পুরুষ বিয়ে করে তার চেয়ে ৮–১০ বছর বয়সে ছোট নারীদের।অর্থাৎ, স্বামী অনেক আগেই বার্ধক্য ও নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কায় থাকে।এটা কেবল একটি উদাহরণ কিন্তু এর ভেতরে নারী পুরুষ উভয়ের নানান কারণে বিভিন্ন অসুস্ততায় ভোগতে পারে এটাই জীবনের নির্মম বাস্তবতা।

তাই বলছি যেসব পুরুষ নারী লিপ্সায় বিভোর, আর যেসব নারী পুরুষ লিপ্সায় বিভ্রান্ত, তারা সবাই বার্ধক্যকে ভয় করুন।এই বার্ধক্য খুব কঠিন সময়, যেখানে যৌবনের লিপ্সা আপনাকে একা করে দেয়, আপনার ভেতরের শান্তি কেড়ে নেয়। জীবনের শেষ সময়টা কেমন হবে, তা কেউ জানে না। কিন্তু অসংখ্য মানুষের জীবন দেখার, শুনার, পড়ার সুযোগ হয়েছে কাছ থেকে দূর থেকে। সেই অভিজ্ঞতার আলোকে বলছি, যে পুরুষ তার স্ত্রীকে অসম্মান করে, যে নারী নিজের সঙ্গীকে অবহেলা করে, তাদের শেষ সময় প্রায়ই গভীর অনুতাপ আর একাকীত্বে ভরে থাকে। শেষ সময়ে বিছানায় শুয়ে যেন আফসোস আপনাকে আরও অসুস্থ না করে তোলে।প্রবৃত্তির শান্তি যেন আপনার বাস্তব শান্তি কেড়ে না নেয়।

তাই আপনার একান্ত নারীকে একান্তই করে রাখুন, যেন তিনি আপনার দুঃখে, অসুখে, বার্ধক্যের দুর্বলতায়, শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত পাশে থাকতে পারেন।

লেখক: জান্নাতুল আদন, চট্টগ্রাম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর