আজ ১লা কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৭ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

ইপিজেড কারখানায় এখনও জ্বলছে আগুন, ভেঙে পড়েছে ভবনের ছাদ

Spread the love

নিউজ ডেস্ক : দীর্ঘ ১১ ঘণ্টা ধরে জ্বলছে চট্টগ্রাম রফতানি প্রক্রিয়াকরণ (সিইপিজেড) এলাকায় ‘অ্যাডামস ক্যাপ অ্যান্ড টেক্সটাইল লিমিটেড’ নামের পোশাক কারখানায় লাগা আগুন। ধসে পড়েছে ভবনের ছাদ। বর্তমানে ওই এলাকায় থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। এরপরও কমছে না আগুনের তীব্রতা।

এ কারখানা থেকে আগুন যাতে আশপাশের কারখানায় ছড়াতে না পারে সে জন্য কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। পাশের ভবনগুলোতে ছিটানো হচ্ছে পানি।

কারখানাটির আগুন নেভাতে একটি রোবট ব্যবহার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক আনোয়ার হোসেন।

তিনি বলেন, ‘আগুন নেভাতে একটি রোবট ব্যবহার করা হচ্ছে। এটিতে লাগানো পাইপ দিয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পানি ছেটানো হচ্ছে। কেননা রোবট আগুনের যতখানি কাছে যেতে পারছে, আগুনের তীব্রতার কারণে মানুষ তত কাছে পোঁছাতে পারছে না।’

সিইপিজেড কর্তৃপক্ষের অতিরিক্ত নির্বাহী পরিচালক আশেক মুহাম্মদ শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ‘অ্যাডামস ক্যাপ অ্যান্ড টেক্সটাইল লিমিটেড কারখানায় ১ হাজার ৫০ জন শ্রমিক নিয়োজিত ছিলেন। আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে ফায়ার অ্যালার্ম বেজে ওঠে এবং শ্রমিকরা ভবনটি থেকে নেমে যান। আগুন প্রথম ওপরের তলায় লাগার কারণে শ্রমিকরা দ্রুত এবং নিরাপদে বের হতে পেরেছেন। এতে কোনও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।’

চট্টগ্রাম বিভাগীয় ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার কাজ করছে। পাশাপাশি কাজ করছে নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর ফায়ার ইউনিট। ফায়ার সার্ভিসকে সহায়তা করছে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশ।

কারখানাটির ৯ তলা ভবনের নিচতলা পর্যন্ত আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। আগুনের তীব্রতায় আশপাশের আরও কয়েকটি কারখানা ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সিইপিজেডের ‘অ্যাডামস ক্যাপ অ্যান্ড টেক্সটাইল লিমিটেড’ নামের ওই কারখানাটির ৭ তলায় আগুন লাগে। বর্তমানে আগুন ৯ তলা ভবনের নিচতলা পর্যন্ত পুরোটাই ছড়িয়ে পড়েছে। রাত ১টা পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি। বরং আগুনের লেলিহান বাড়ছেই।

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) দুপুর ২টা ১০ মিনিটে সিইপিজেডের ১ নম্বর সেক্টরের ৫ নম্বর সড়কের ‘অ্যাডামস ক্যাপ অ্যান্ড টেক্সটাইল লিমিটেড’ নামের ওই কারখানায় আগুন লাগে।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক জসিম উদ্দিন বলেন, ‘আগুন লাগা প্রতিষ্ঠানটিতে তোয়ালেসহ হাসপাতালে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি তৈরি করা হয়। আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে বিস্তারিত পরে জানানো হবে। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ হতাহত হয়নি।’

ফায়ার সার্ভিসের বিভাগীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ সূত্র জানিয়েছে, আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের বন্দর, আগ্রাবাদ, ইপিজেড, কালুরঘাট ও চন্দনপুরা স্টেশনের ২৫ ইউনিট।

সিএমপির ইপিজেড থানার ওসি মোহাম্মদ জামির হোসেন জিয়া বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘অ্যাডামস ক্যাপ অ্যান্ড টেক্সটাইল লিমিটেড কারখানায় লাগা আগুন এখনও জ্বলছে। বর্তমানে আগুন পুরো ভবনে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রথমে ভবনের সপ্তম তলায় যেখানে আগুন লাগে সেখানে চিকিৎসা সরঞ্জামও তৈরি করা হয়। মূলত জিনিসপত্র রাখার গুদাম থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে কারখানার সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে। ওইখানে লোকজন ছিল না বলে জেনেছি। যারা নিচের তলায় ছিল তারা বেরিয়ে এসেছে। কেউ কেউ হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে সামান্য আহত হয়েছেন। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।’

তিনি আরও জানান, বর্তমানে ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর ফায়ার ইউনিট আগুন নেভাতে কাজ করছে। সহযোগিতা করছে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর